নারীর সাজসজ্জায় গহনা ব্যবহারে প্রচলন যুগ যুগ ধরে। যার সিংহভাগই সোনার তৈরি গহনা। সাধ্যের মধ্যে একটু হলেও স্বর্ণালঙ্কার কেনার স্বপ্ন থাকে সব শ্রেণীপেশার মানুষের। তবে অনেকের স্বপ্ন পূরণে এখন প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে সোনার দাম বৃদ্ধি। এতে সোনার দোকানে ক্রেতা কমে বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। কাজ কমে যাওয়ায় বাধ্য হয়ে অন্য পেশায় ঝুঁকছেন কারিগররা, আবার চাহিদা মতো বিক্রি না থাকায় কারিগর ছাটাই করছেন দোকান মালিকরা। লোকসানে অনেকে বাপ-দাদার এ ব্যবসা গুটিয়ে ঝুঁকছেন অন্য পেশায়।
সরজমিনে বরগুনা পৌরশহরের বিভিন্ন সোনার দোকান ঘুরে দেখা যায়, ব্যবসায়ীদের মধ্যে নেই প্রাণচাঞ্চল্যতা। ক্রেতাদের আনাগোনা নেই চোখে পড়ার মতো। উপকূলীয় এ জেলায় অধিকাংশ মানুষই নিম্ন আয়ের। ফলে রাজধানীসহ দেশের সব বড় শহরে কম বেশি সোনার দোকানে মানুষের ভিড় থকলেও এখানে সে তুলনায় বিক্রি অনেক কম। এতে বিভিন্ন দোকানের বেশিরভাগ কারিগর ও মালিকরা বসে থেকে অলস সময় পার করছেন।
বরগুনার মীর গোলাম সরোয়ার রোডের তৃপ্তি জুয়েলার্স নামের সোনার দোকানের মালিক উজ্জল কর্মকার জাগো নিউজকে বলেন, সোনা ব্যবসায়ীদের অবস্থা খুবই খারাপ। দিন দিন সোনার দাম ওঠানামা করায় ক্রেতা পাওয়াই কষ্ট। আগে অনেক ক্রেতা পেলেও এখন সোনার দাম এক লাখ টাকার বেশি ভরি হওয়ায় ক্রেতারা কিনছেন না। এছাড়া আমাদের মফস্বল শহরে এমনিতেই তেমন ক্রেতা নেই যা অন্য শহর অথবা ঢাকায় আছে।
বাজার রোড এলাকার আর কে গিনি ভবন অ্যান্ড জুয়েলার্সের মালিক মিহির কর্মকার জাগো নিউজকে বলেন, সোনার দাম এক হাজার টাকা কমলে আবার বেড়ে যায় দুই থেকে পাঁচ হাজার টাকা। এতে দোকানে ক্রেতারা এলেও বেশিরভাগ দাম শুনে চলে যায়। বিক্রি কমে যাওয়ায় আমাদের দোকানের কর্মচারীদের অনেকেই অন্য পেশায় চলে গেছে। অনেকে আবার চায়ের দোকান দিয়েছেন। আমরা সোনা ব্যবসায়ীরা এখন বেহাল অবস্থায় আছি।
মাধবী জুয়েলার্সের মালিক মানিক লাল কর্মকার জাগো নিউজকে বলেন, ক্রেতারা যখন সোনার গহনা তৈরি করতে দেয় তখন পুরো টাকা দেওয়ার নিয়ম থাকলেও দেয়না। ১ লাখ টাকার কাজে হয়তো ১০ হাজার টাকা দিয়ে যায়। এক সপ্তাহ পরে যখন নিতে আসে তখন সোনার দাম বাড়তি থাকলেও আমরা ক্রেতাদের সঙ্গে সম্পর্ক ঠিক রাখতে কিছুই বলতে পারি না। এতে ক্রেতাদের সঙ্গে বেচাবিক্রি নিয়ে আমাদের বিপাকে পড়তে হয়। এছাড়া এবছর ভরি প্রতি দুই হাজার টাকা সোনার ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে ছোট ছোট কিছু সোনার গহনা তৈরির কাজ আছে। তবে একান্ত প্রয়োজন ছাড়া কেউ আমাদের দোকানে আর আসে না।











